প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের মাধ্যমে বিনামূল্যে থেরাপি (Early Intervention) সেবা প্রদান
২০০৯-২০১০ থেকে ২০১৪-২০১৫ সময়কালে সারাদেশের ৬৪টি জেলা ও ৩৯টি উপজেলায় সর্বমোট ১০৩টি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এ সকল কেন্দ্রসমূহ হতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অটিজমসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে থেরাপিউটিক, কাউন্সেলিং ও রেফারেল সেবা এবং সহায়ক উপকরণ প্রদান করা হচ্ছে। ২ এপ্রিল ২০১০ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র শীর্ষক কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। এ কর্মসূচি পর্যায়ক্রমে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে। উক্ত কেন্দ্রের মাধ্যমে জুন/২০২০ পর্যন্ত নিবন্ধিত সেবা গ্রহীতাঁর সংখ্যা ৫,২৭,৪২৯ জন ও মোট প্রদত্ত সেবা সংখ্যা (Service Transaction) ৬৯,৯৮,৫২৮টি।এ পর্যন্ত কৃত্রিম অংগ, হুইল চেয়ার, ট্রাইসাইকেল, ক্রাচ, স্ট্যান্ডিং ফ্রেম, ওয়াকিং ফ্রেম, সাদাছড়ি, এলবো ক্র্যাচ, আয়বর্ধক উপকরণ হিসেবে সেলাই মেশিনসহ মোট ৪৫,৫৩৪ টি সহায়ক উপকরণ প্রতিবন্ধী ও প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
প্রতিবন্ধী শিশু/ব্যক্তিদের মধ্যে বিনামূল্যে সহায়ক উপকরণ বিতরণ
অটিজম ও এনডিডি কর্নার সেবা
Early Detection, Assessment ও Early Intervention নিশ্চিত করার জন্য জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের আওতায় পরিচালিত ১০৩টি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে একটি করে অটিজম ও নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী (এনডিডি) কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। উক্ত ১০৩টি কেন্দ্র হতে অটিজম সমস্যাগ্রস্থ শিশু/ব্যক্তিদের নিন্মোক্ত সেবা প্রদান হচ্ছেঃ
অটিজম রিসোর্স সেন্টার এর মাধ্যমে সেবা প্রদানঃ
প্রতিবন্ধী বান্ধব সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন ক্যাম্পাসে ২০১০ সালে একটি অটিজম রিসোর্স সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়। উক্ত সেন্টার থেকে অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন শিশু ও ব্যক্তিবর্গকে বিনামূল্যে নিয়মিত বিভিন্ন ধরণের থেরাপি সেবা, গ্রুপ থেরাপি, দৈনন্দিন কার্যবিধি প্রশিক্ষণসহ রেফারেল ও অটিজম সমসম্যাগ্রস্থ শিশুদের পিতা-মাতাদের কাউন্সেলিং সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ২০১০ সালে চালু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ১৯,২২৪ জন অটিজম সমস্যাগ্রস্থ শিশু ও ব্যক্তিকে বিনামূল্যে ম্যানুয়াল ও Instrumental থেরাপি সার্ভিসসহ কাউন্সেলিং প্রদান করা হয়েছে।
(ক) সেবাসমূহঃ
(খ) সেবা গ্রহণকারীঃ
(ক) অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার (ASD)
(খ) বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা (ID)
(গ) সেরিব্রাল পালসি (CP)
(ঘ) ডাউন সিনড্রোম (DS)
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা
জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের আওতাধীন ৬২টি বেসরকারি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের ৮১৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর ১০০% বেতন ভাতাদি প্রদান করা হচ্ছে। প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা, ২০০৯ কে আধুনিক ও যুগপোযোগী করে প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা-২০১৯ জারি করা হয়েছে। ৭ হাজার ৫ শত জন প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীর বিশেষ শিক্ষা প্রদান কার্যক্রম চলমান আছে।
স্পেশাল স্কুল ফর চিলড্রেন উইথ অটিজম কার্যক্রম পরিচালনা
অক্টোবর, ২০১১ সনে ফাউন্ডেশন ক্যাম্পাসে একটি সম্পূর্ণ অবৈতনিক স্পেশাল স্কুল ফর চিলড্রেন উইথ অটিজম চালু করা হয়। পরবর্তীতে ঢাকা শহরে মিরপুর, লালবাগ, উত্তরা ও যাত্রাবাড়ী, ৬টি বিভাগীয় শহরে ৬টি (রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রংপুর ও সিলেট) এবং গাইবান্ধা জেলায় ১টি সহ মোট ১১টি অটিজম স্পেশাল স্কুল চালু করা হয়েছে। উক্ত স্কুলগুলোতে অটিজম ও এনডিডি সমস্যাগ্রস্থ শিশুদের অক্ষর জ্ঞান, সংখ্যা, কালার, ম্যাচিং, এডিএল, মিউজিক, খেলা-ধূলা, সাধারণ জ্ঞান, যোগাযোগ, সামাজিকতা, আচরণ পরিবর্তন এবং পুনর্বাসন ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করা হয়। এসব স্কুলে চলতি শিক্ষাবর্ষে মোট ১৪৪ জন অটিজম সমস্যাগ্রস্থ শিশু ছাত্র-ছাত্রী বিনামূল্যে লেখাপড়া করার সুযোগ পাচ্ছে।
ভ্রাম্যমাণ ওয়ান স্টপ থেরাপি সার্ভিস
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত অটিজমসহ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী এবং প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের ৩২টি মোবাইল থেরাপি ভ্যানের মাধ্যমে বিনামূল্যে থেরাপিউটিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ৩২টি মোবাইল থেরাপি ভ্যানের মাধ্যমে জুন ২০২০ পর্যন্ত বিনামূল্যে নিবন্ধিত থেরাপিউটিক সেবা গ্রহিতার সংখ্যা ৩,৩৯,০৫৫ জন এবং প্রদত্ত সেবা সংখ্যা (Service Transaction) ৭,৯০,৮৬৬ টি।
এছাড়া, জুন ২০১৭ থেকে বাংলাদেশ সচিবালয়ে একটি মোবাইল থেরাপি ভ্যান ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। উক্ত ক্যাম্পের মাধ্যমে সপ্তাহে ৩দিন কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিনামূল্যে থেরাপিউটিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে। জুন ২০২০ পর্যন্ত নিবন্ধিত সেবা গ্রহীতা ১৩৮৪ জন এবং তাঁদের প্রদত্ত সেবা সংখ্যা (Service Transaction) ২১৭৩১ জন। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসরত প্রতিবন্ধী মানুষের দোর গোড়ায় থেরাপি সেবাগুলো পৌঁছে দেয়া এই ভ্রাম্যমান ভ্যান সার্ভিসের অন্যতম লক্ষ্য।
কর্মজীবী প্রতিবন্ধী পুরুষ ও মহিলা হোস্টেল
চাকুরী প্রত্যাশি ও কর্মক্ষম প্রতিবন্ধী মানুষের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ফাউন্ডেশন ক্যাম্পাসে ১টি করে প্রতিবন্ধী পুরুষ ও মহিলা হোস্টেল চালু করা হয়েছে। এ পর্যন্ত উপকারভোগীর সংখ্যা ২৮৫ জন। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করে ৩০ হতে ৪০ তে উন্নীত করা হয়েছে।
কর্মজীবী প্রতিবন্ধী পুরুষ ও মহিলা হোস্টেলে কখন আবেদন করতে হয়ঃ বছরে যে কোন সময়ে আবেদন করা যায় (সিট শূন্য থাকা সাপেক্ষে) । আবেদন যাচাই বাছাই করে আসন বরাদ্দ করা হয়।
কর্মজীবী প্রতিবন্ধী পুরুষ ও মহিলা হোস্টেলে সিট প্রাপ্তির নিয়মাবলী:
কর্মজীবী পুরুষ ও মহিলা হোস্টেলে সিট প্রাপ্তির জন্য নির্ধারিত আবেদন ফরম জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন কার্যালয় হতে সংগ্রহপূর্বক পূরণ করে এর সাথে (ক) ২ কপি পাসর্পোট সাইজের ছবি (খ) কর্মরত/অধ্যয়নরত প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়ন পত্র (গ) প্রতিবন্ধিতার সনদপত্র (ঘ) জাতীয় পরিচয়পত্র (ঙ) অস্বচ্ছলতার সনদপত্রের কপি ইত্যাদি দাখিল করতে হয়।
প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন
প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা-২০১৯ এর আওতায় সর্বমোট ৬২ টি বিশেষ স্কুলের শিক্ষক/কর্মচারীর ১০০% বেতন-ভাতা জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সরকার কর্তৃক পরিশোধ করা হচ্ছে। বর্তমানে উক্ত স্কুলসমূহে ৮২৩ শিক্ষক/কর্মচারী এবং ৭২২৮ জন ছাত্র/ছাত্রী রয়েছে। ২০০৯ সালের প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালাটি আরো যুগোপযোগী করে প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা-২০১৯ প্রণয়ন করা হয়েছে।
অটিজম সমস্যাগ্রস্থ সন্তানদের পিতা-মাতা/অভিভাবক ও কেয়ার গিভারদের প্রশিক্ষণ
জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে প্রতিবছর অটিজম সমস্যাগ্রস্থ সন্তানদের পিতা-মাতা/অভিভাবক ও কেয়ার গিভারদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এ পর্যন্ত বিভিন্ন জেলা/ উপজেলাসহ তৃণমূল পর্যায়ে ৮৫২ জন অটিজম ও এনডিডি সমস্যাগ্রস্থ সন্তানের অভিভাবক/পিতা-মাতা/কেয়ারগিভারকে দৈনন্দিন জীবন যাপন ব্যবস্থা, আচরণগত সমস্যা, সাধারণ শিক্ষা ও সামাজিকতাসহ দৈনন্দিন কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
পিতৃ-মাতৃহীন প্রতিবন্ধী শিশু নিবাস
জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন ক্যাম্পাসে ফাউন্ডেশনের সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে সেরিব্রাল পালসি (সিপি) শিশুর লালন পালন, শিক্ষা, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য একটি প্রতিবন্ধী শিশু নিবাস চলমান আছে। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে শিশু নিবাসের আসন সংখ্যা ৮ হতে বৃদ্ধি করে ১১ তে উন্নীত করা হয়েছে।
দক্ষতা বৃদ্ধি বিষয়ক প্রশিক্ষণ
অটিজমসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তোলার লক্ষ্যে ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে কর্মরত জনবলকে দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য পর্যায়ক্রমে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক্ষ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত ৪০৩৫ জনকে অভ্যন্তরীণ ও ২১৫ জনকে বৈদেশিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
বেসরকারি সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়ে অনুদান প্রদান কার্যক্রম
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে অনুদান/ঋণ নীতিমালা অনুযায়ী ফাউন্ডেশনের কল্যাণ তহবিল থেকে ২০০৩-২০০৪ হতে এ পর্যন্ত প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ও পুর্নবাসনের লক্ষ্যে প্রায় ১১ কোটি ৩৫ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা অনুদান এবং ঋণ বাবদ ২ কোটি ৭১ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণে কর্মরত বেসরকারি সংস্থার মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
অনুদান গ্রহণের জন্য যোগ্য সংগঠন
নিন্মোক্ত যোগ্যতার অধিকারী বাংলাদেশে কর্মরত জাতীয় বা স্থানীয় বেসরকারী সংস্থা/সংগঠন ফাউন্ডেশনের অনুদান গ্রহণের জন্য বিবেচিত হবেনঃ
অনুদানের আওতায় সাধারণভাবে নিন্মোক্ত কার্যক্রমসমূহের প্রধান্য থাকেঃ
১। প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধ সংক্রান্ত বিষয়ে সুনিদির্ষ্ট কার্যক্রম।
২। প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সুনিদির্ষ্ট কার্যক্রম।
৩। প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জনগোষ্ঠীর প্রত্যক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসা ও পুনর্বাসন সেবা।
৪। সহায়ক উপকরণ তৈরী ও সেবা প্রদান।
৫। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষা কার্যক্রম।
৬। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতীয় ও স্থানীয় ভিত্তিক আন্তসাংগঠনিক কার্যক্রমের সমন্বয় কার্যক্রম।
৭। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বহুমুখী উন্নয়ন কার্যক্রমে সম্পৃক্তকরণ।
৮। প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা।
৯। প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ, গবেষণা, তথ্য সংরক্ষণ ও বিতরণ।
১০। প্রতিবন্ধিতা রোধ ও নিরসনে চিকিৎসা।
১১। সমাজভিত্তিক পূর্নবাসন/ সিবিআর (কমিউনিটি বেইজড রিহেবিলিটেশন )।
১২। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রদান।
১৩। প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়নে দক্ষতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষণ।
১৪। বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও গণসচেতনতা উপকরণ তৈরী ও উন্নয়ন।
১৫। প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন কার্যক্রমে পরামর্শ ও কৌশলগত সহায়তা।
১৬। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রবেশগম্যতা।
১৭। বিশেষ সেবা প্রদান/ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আইনি সহায়তা কার্যক্রম।
১৮। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণ কার্যক্রম পরিচালনা।
১৯। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সংগ্রহ ও সরকারী/বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মে নিয়োগ দানের বিষয়ে প্রকল্প গ্রহণ ও সহযোগীতা প্রদান।
২০। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আধুনিক প্রযুক্তিতে দক্ষতা সৃষ্টির লক্ষ্যে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী আইসিটি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এবং কম্পিউটার প্রযুক্তিকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রবেশগম্য করার জন্য উপযুক্ত কার্যক্রম গ্রহণ।
এছাড়া, ফাউন্ডেশনের পরিচালকমন্ডলীর বিশেষ বিবেচনায় প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে অন্য যে কোন কার্যক্রম অনুদানের আওতায় বিবেচিত হবে।
প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদপ্তর বাস্তবায়ন
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২ এপ্রিল/২০১৪ তারিখ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদপ্তরের ফলক উন্মোচন করেন এবং জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনকে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদপ্তরে রুপান্তরের ঘোষনা প্রদান করেন। উক্ত ঘোষনার আলোকে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনকে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদপ্তরে রুপান্তরকরণ এবং ফাউন্ডেশনের আওতায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির জনবলকে রাজস্বখাতে স্থানান্তর ও অধিদপ্তর বাস্তবায়নের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির উন্নয়ন মেলা
প্রতিবছর ৩ ডিসেম্বর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস উদযাপন উপলক্ষে ফাউন্ডেশন চত্বরে সপ্তাহব্যাপী প্রতিবন্ধী ব্যক্তির উন্নয়ন মেলার আয়োজন করা হয়। এ মেলায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দ্বারা তৈরীকৃত পণ্যসামগ্রী বিপণন, প্রদর্শন ও বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গ সরাসরি অংশ গ্রহণের মাধ্যমে তাঁদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি হয়। প্রতিভাবান প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গ গান, নৃত্য নাটক ও কবিতা আবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করেন। মেলায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গের দ্বারা তৈরীকৃত বিভিন্ন খাবার সামগ্রী, নকশী কাঁথা, তৈরী পোষাক, শাড়ী, খেলনা সামগ্রী, প্লাস্টিক দ্রব্যাদি, মুক্তাপানি, বিভিন্ন ধরণের উদ্ভাবনী দ্রব্যসামগ্রী ইত্যাদি প্রদর্শন ও বিক্রয় করা হয়। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৫ দিনব্যাপী প্রতিবন্ধী ব্যক্তির উন্নয়ন মেলা ১০-১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফাউন্ডেশন ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব নুরুজ্জামান আহমেদ এম.পি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উক্ত মেলার শুভ উদ্বোধন করেন।
বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসে সপ্তাহব্যাপী নীলবাতি প্রজ্জলন
অটিজম বিষয়ে সচেতনতা তৈরীর লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী Light It Up Blue (LIUB) বা নীলবাতি প্রজ্জলন একটি অতি জনপ্রিয় ও কার্যকর পদ্ধতি। ২ এপ্রিল ২০১৫ তারিখ হতে প্রতিবছর জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এর প্রধান কার্যালয়সহ ১০৩টি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে সপ্তাহব্যাপী নীল বাতি প্রজ্জলন করা হয়।
গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম
গণসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য মাইকিং এবং জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তৈরীকৃত বুকলেট, লিফলেট, প্রামাণ্য চিত্র ইত্যাদি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের মাধ্যমে দেশব্যাপী নিয়মিতভাবে বিতরণ/প্রচার করা হয়।
চাকরী প্রত্যাশী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান মেলা (ফেয়ার) আয়োজন
জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে মে ২০১৬ ও নভেম্বর ২০১৮ সনে ২ দিনব্যাপী ২টি জব ফেয়ারের আয়োজন করা হয়েছে। জব ফেয়ার আয়োজনের মাধ্যমে ১১০ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থায় চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন কার্যালয়ে একটি Job Placement শাখা খোলা হয়েছে। উক্ত শাখার মাধ্যমে চাকুরী প্রত্যাশী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের তথ্যাদি সংরক্ষণ এবং তাঁদের কর্মসংস্থানের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।
সেমিনার ও ওয়ার্কসপ/কর্মশালার আয়োজন
জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনায় নিয়মিত সেমিনার ও ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, এনজিও ব্যক্তিত্ব, অটিজম ও প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে বিশেষজ্ঞগণের সমন্বয়ে এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজনের উপস্থিতিতে উক্ত সেমিনার ও ওয়ার্কশপ আয়োজন করা হয়।
করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাঝে ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা বিতরণ
করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের জন্য জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউণ্ডেশন হতে ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। উক্ত অর্থ ব্যয়ে জেলা প্রশাসন ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে নিয়োজিত বেসরকারি সংগঠনসমূহের মাধ্যমে অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস উদযাপন
জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রতিবছর ৩ ডিসেম্বর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় সরকারি ও বেসরকারি সহায়তায় আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে উদযাপন করা হয়। ২০১৯ সালের ২৮ তম আন্তর্জাতিক ও ২১ তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস আড়ম্বরপুর্ণ পরিবেশে ফাউন্ডেশন ক্যাম্পাসে উদযাপন করা হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বানলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে প্রধান অতিথি হিসেবে ফাউন্ডেশন ক্যাম্পাসে উপস্থিত হয়ে উক্ত দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন।
বিশ্ব সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবস উদযাপন
জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রতিবছর ১৫ অক্টোবর বিশ্ব সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবস সরকারিভাবে যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে শোভাযাত্রা, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে মেধাবী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের সম্মাননা ও অনুদান প্রদান এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি/বেসরকারি সংস্থাসমূহের মধ্যে সাদাছড়ি বিতরণ করা হয়। ২০১৯ সালের বিশ্ব সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবস গত ১৫ অক্টোবর, ২০১৯ তারিখে ফাউন্ডেশন ক্যাম্পাসে আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে উদযাপন করা হয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব নুরুজ্জামান আহমেদ এম.পি. প্রধান অতিথি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব শরীফ আহমেদ এম.পি. বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করেন।
বাংলা ইশার ভাষা দিবস উদযাপন
জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন চত্তরে ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রথম বারের মত ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে বাংলা ইশারা ভাষা দিবস সরকারিভাবে উদযাপন করা হয়। এ দিবসে ফাউন্ডেশন থেকে ২০ জন মেধাবী বাক-প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীকে ৫,০০০টাকা করে অনুদান ও সনদ প্রদান করা হয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব নুরুজ্জামান আহমেদ এম.পি. প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উক্ত দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন।
সরকারি/বেসরকারী সংস্থার সাথে সমঝোতা স্মারক (MoU) সম্পাদন